সুখের অনুভব পর্ব ৮
Jhorna Islam
তুলনার মুখে মূলা খেত কথাটা শুনে শরিফা বলে উঠে,,,
আফা আমনের বুঝি মূলা বহুত পছন্দ? আগে কইবেন না আমনে আমারে।আমাগো গেরামের অনেক মাইনসে মূলা লাগায়।খুঁজলে মা’গনাই দিবো।বড় বড় মূলা। আমনে কইলে আমি আইনা দিমু।তারপরে সুন্দর কইরা ধুইয়া শু’ট’কি দিয়া গুতাই গুতাইয়া রাইনদা দিমু আমনেরে।আহা কি যে স্বাদ লাগে গো আফা আমনেরে কিতা কমু। আমার তো এহনই মুখে পানি আইয়া পরছে।
তুলনা শরিফার মুখে এসব শুনে বলে,,,,ছিঃ চুপা যা তুই শরিফা বানু তিব্বত সু’নু।
আমার কিন্তু ব’মি আসতেছে।ছিঃ ইয়াক।যা সর তুই আমার চোখের সামনে থেকে। তুই আমার মাথা খারাপ করে দিলি।
আরও পর্ব গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
আফা আমনের ব’মি আইতে চায়? আমনে কি পো’য়াতি আফা।আমাগো গেরামে তো পো’য়াতি বউরাই ব’মি করবার চায় হুদাহুদি ই।আমনের ও দেহি হুদাই ব’মি আইবার চায়।ওমা আফা সুখবর আইতাছে নি?
তুলনা এবার শরিফার কথা শুনে চ’রম ভাবে রে’গে যায়।পাশ থেকে বালিশ টা হাতে নিয়ে ছুঁড়ে মারে। তুই যা শরিফা নয়তো তোর মাথা ফাটাবো আমি।
শরিফা তুলনার রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে যায়। বাইরে গিয়ে হাঁপাতে থাকে। বু’কে থু’থু দিয়ে ভাবে,, আফা কালকা থেইকা এমন করতাছে কেন? আমার কোনো কথাই আফার সহ্য হইতাছে না।কিজানি কি হইছে।
তুলনা ফ্রেশ হয়ে হাত মুখ মুছতে মুছতে বের হয়ে আসে ওয়াশরুম থেকে। এসেই দেখে তার ফোন বেজে চলেছে। তাই তারাতাড়ি ফোনের কাছে যায়। ফোনের স্ক্রিনে জান লিখাটা জ্বল জ্বল করছে।
— হ্যালো!
— এতো সময় লাগে কল রিসিভ করতে ই’ডি’য়’ট?
— আমি ওয়াশরুমে ছিলাম।ফ্রেশ হয়ে মাত্রই আসলাম।
— ওহ মহারানী মাত্র ঘুম থেকে উঠলেন।
— হুম।
— যে জন্য ফোন করেছিলাম। আজ দুপুরে ভেবেছিলাম এসে পরবো।বাট আমার আসতে লে’ট হবে।অনেক কাজ জমে আছে। এইগুলো করে শেষ করতে হবে। আবার আহানের রিসেপশন সামনে। তখন আবার কাজ করতে পারবো না। এখনকার কাজ আবার আগামী দিনের কাজ সব মিলিয়ে তাহলে কাজের পাহাড় জমে যাবে। এই কয়দিনের কাজ গুলো এখনই করে শেষ করতে হবে বুঝলে? তাই দুপুরে আসতে পারবো না।আর আজ রাতে কখন আসবো নিজেও জানি না।অনেক রাত হয়ে যেতে পারে। তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে পইরো।
— দুপুরে এসে বাড়িতে খেয়ে যাও।পরে গিয়ে কাজ কইরো।
— হবে না জানের পাখি।যতোক্ষনে বাড়িতে যাবো।ততক্ষণে আরেকটু কাজ করে শেষ করতে পারবো।
— কিন্তু,,,,,,,
— এসব বাদ দাও।তোমাকে এসব নিয়ে ভাবতে হবে না।তুমি গিয়ে এখন তারাতাড়ি খাও।অলরেডি অনেক বেলা হয়ে গেছে। পরে আবার অসুস্থ হয়ে পরবা।
— হুম এখনই যাবো খেতে।প্রচুর খিদে পেয়েছে।
— ওকে তো খাও গিয়ে।বায় টেক কেয়ার জানের পাখি।
— বায়।
তুলনা খাওয়ার জন্য নিচে নেমে দেখে আহানা রিয়ার সাথে বসে গল্প করছে। পাশে আমান,আহান,আর আজানের মা ওদের মধ্যে গল্প করছে। আমানের বউ মনে হয় উপরে আছে।তাকে আশে পাশে কোথাও দেখতে পেলোনা তুলনা।
তুলনা গিয়ে আহানা আর রিয়ার সামনে দাঁড়ায়। রিয়া তুলনাকে দেখে হাসি মুখে বলে,,, গুড মনিং ভাবি!
গুড মনিং। বলে আহানার দিকে তাকায়। আহানা তাকে পাত্তাই দিচ্ছে না। এটা দেখে মনে মনে ফুঁসতে থাকে। তারপর কিছু একটা ভেবে মনে মনে বলে,,, কর কর যতো পারিস ইগনোর কর।আমি তোকে কিছু বলবো না। রাগবো ও নাহ। দেখি কতোদিন আমায় ইগনোর করতে পারিস। সেই তো তোর আমার পিছনেই ঘুরা লাগবে আনা বে’বি। তখন ইগনোর কাকে বলে,,কতো প্রকার ও কি কি তাহা আমি হাতে নাতে তোকে শিখিয়ে দেবো হুহ্।
তারপর খাবার টেবিলে গিয়ে বসে পরে। তুলনাকে খাবার টেবিলে দেখে আজানের মা আড্ডা থেকে উঠে যায়।কি জানি মেয়েটা একা একা কি খায়। ঠিক মতো নিজের হাতে নিয়ে খাবে ও না।পরে অসুস্থ হয়ে পরবে।
আমান,আজানের মা যে যার যার পুত্র বধূদের যত্ন নিজে নেয়।
এতোদিন আহানের মা আমান আর আজানের বউ কেই যত্ন নিতো।এখন তো নিজের ও ছেলের বউ হয়েছে। কাজ তো আর কারো করা লাগে না।তাই নিজেদের বউমাদের যত্ন সহকারে খাওয়া দাওয়া করায়।আজ কালকার ছেলে মেয়েরা তো ভালো করে খেতেই চায় না। শ্বাশুড়ি হিসাবে এদের কোন তুলনা নেই।বেস্ট শ্বাশুড়ি এরা। নিজেদের মেয়ের মতো দেখে বউমাদের।
তুলনাকে আজানের মা নিজে খাবার এসে বেড়ে দিতে থাকে। শরিফা এসে তুলনার চেয়ারের পাশে দাড়িয়ে থাকে।
— আম্মু এতো দিও না।খেতে পারবো না।
— চুপচাপ খা আম্মু বেশি দেই নি তো।এই অল্প কয়টা।
— এইখানে অল্প কয়টা? দুইবারের খাবার তুমি আমায় একবারে দিয়েছো।
— এইখানে দুই বারের খাবার? এর থেকে বেশি তো একটা বাচ্চা ও খেতে পারে।
— তুলনা তাকায় মুখের দিকে।
— এভাবে তাকানোর কি আছে? ঠিকই তো বলেছি। নিজের শরীরের দিকে তাকিয়ে দেখেছো? পরে গিয়ে কতো প্রবলেম হতে পারে জানো না? এখন থেকে বেশি বেশি খাবা।
— তুলনা এক লুকমা মুখে দিয়েই না চিবিয়ে চুপ করে থাকে।
— কি হয়েছে তুলু? খাচ্ছোনা কেনো?
— আম্মু মাংস কি মূলা দিয়ে রান্না করেছো? খাবারে মূলার গন্ধ পাচ্ছি কেনো?
— কি বলো? এসব মূলা দিয়ে রান্না করে? আমি এই বাড়িতে এসেছি আজ কতো বছর ধারণা আছে? আমি একদিন বাড়িতে মূলা আনতে দেখলাম না। আর তুমি বলছো মাংস মূলা দিয়ে রান্না করেছে।পা/গলি আমাদের বাড়িতে কে মূলা খায়? চুপচাপ খাও। সব না খাওয়ার বাহানা তাই না?
মাঝখান থেকে শরিফা বলে উঠে,,বড় আম্মা আফামনির মনে হয় মূলা খাইবার সাধ জাগছে।হের লাইগা সব জায়গায় মূলার গন্ধ পাইতাছে।তারপর আজানের মার কানের কাছে এগিয়ে গিয়ে বলে,,বড় আম্মা আমার মনে হয় আফায় পো’য়াতি হুদাই ব’মি করবার চায়।
আজানের মা শরিফার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকায়। হাতে চড় দেখিয়ে বলে,,মারবো! খুব পাঁজি আর দুষ্টু হয়ে গেছো তুমি। বাচ্চা মেয়ে কি সব কথা। তুলনা শুনলে তোমাকে মাইর লাগাবে।
তুলনা আস্তে আস্তে খেতে থাকে। খেতে খেতেই বলে,,আম্মু জান ভাইয়া আজ দুপুরে খেতে আসতে পারবেনা।এমনিতেই আসতে নাকি অনেক রাত হয়ে যাবে। কাজ নাকি অনেক।
হ্যা বলে গেছে আমায়। দুপুরে ঠিক মতো হয়তো খাবেও না।কাজে থাকলেতো কোন কিছুতেই খেয়াল থাকে না ছেলেটার।
আম্মু জান ভাইয়ার খাবারটা৷ টিফিন বক্সে ভরে দাও আমি নিয়ে যাবো।নয়তো খাওয়ার কথা ভুলেই যাবে।
ঠিক আছে।
দুপুরে আজানের জন্য তুলনা খাবার নিয়ে অফিসে হাজির হয়।
এখন মনে হয় লাঞ্চ আওয়ার চলছে।সবাই ক্যানটিনে খাবার খেতে গেছে হয়তো। কেউ কেউ হয়তো খেয়ে এসে কাজেও লেগে পরছে।
তুলনা আজানের ক্যাবিনে যাওয়ার সময় ই আজানের পি.এ এর সাথে দেখা হয়ে যায়।
সালাম বিনিময় করে জানতে চায় আজান কোথায়। পি.এ জানায় ক্যাবিনেই আছে।অনেক কাজ জমেছে তো ঐগুলোই করছে।কাউকে ডিসটার্ব করতে বারন করেছে।তুলনা কিছু না বলেই খাবার হাতে নিয়ে আজানের ক্যাবিনের দরজার পাশে দাঁড়ায়।
বাম হাতে ছোট করে একবার টোকা দেয়। কোনো সারা পায় না।তাই আবার ও টোকা দেয়,এইবার একটু জোরেই।
আজান ভিতর থেকে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠে কামিং।
তুলনা ভিতরে ঢুকে যায়।
আজান এখনো মাথা তুলে দেখেনি কে এসেছে। সেতো তার কাজ নিয়ে বিজি।
তুলনা খাবারের বক্স টা টেবিলের উপর আস্তে করে রাখে।তারপর পা টিপে টিপে আজানের কাছে এগিয়ে গিয়ে হঠাৎ করেই আজানের কোলের উপর বসে গলা জড়িয়ে ধরে।
আজান আ’ক’স্মি’ক হকচকায়। হোয়াট দা,,, বলেই থেমে যায়। বুঝতে আর বাকি নেই কে এটা।তুমি এখানে?
তুলনা আজানের দিকে তাকিয়ে বলে,, তোমাকে মিস করছিলাম তাই এসে পরেছি। আর তুমি যে না খেয়ে কাজে বসে থাকবা সেটা আমি ভালো করেই জানি। তাই খাবার নিয়ে এসেছি।
এসব আনতে কে বলেছে তোমায়? যতক্ষনে খাবো। ততক্ষণে আরেকটু কাজ এগুতে পারবো।
এতো কাজ করতে হবে না তোমার।না খেয়ে খেয়ে।
বায় দা ওয়ে এক হিসাবে ভালো হয়েছে ম্যাডাম এসেছেন। প্রচুর এনার্জি দরকার আমার এখন।বলেই তুলনাকে কিছু বলতে না দিয়েই তুলনার ঠোঁট দখল করে নেয়।কিছু সময় পর ছেড়ে দিয়ে তুলনার কপালে চুমু খায় একটা।
তুমি অনেক বা’জে।যদি কেউ এসে পরতো?
আজানের পার্মিশন ছাড়া কারো ঢুকার সাহস নেই।
তারপর আজান আবার কাজে লেগে পরে। তুলনা হাত ধুয়ে এসে আজান কে খাইয়ে দিতে থাকে। আজান খাচ্ছে আর কাজ করছে।
প্রায় অনেকসময় হয়ে গেছে। এখন সন্ধা। আজান বলেছিলো তুলনাকে চলে যেতে তার রাত হবে।কিন্তু তুলনা শুনলে তো সে আজানের সাথে একসাথেই বাড়িতে ফিরবে।
পুরো অফিস ঘুরে এসেছে।কর্মচারীরা চলেগেছে সবাই।তুলনা পায়চারি করছে মোবাইল টিপছে।আবার আজানের দিকে তাকিয়ে রয়। আজান আবার খাবার অর্ডার করেছিলো রাতের জন্য। দুইজন এক সাথেই খেয়েছে।
সুখের অনুভব পর্ব ৭
রাত প্রায় এগারোটার দিকে আজান কাজ শেষ করে। আড়মোড়া ভেঙে সোফায় তাকিয়ে দেখে তার বউ মোবাইল দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেছে। মুচকি হেসে তুলনার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে। মুখের উপর পরে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিয়ে কোলে তুলে নেয়। তারপর ক্যাবিন থেকে বেরিয়ে বাইরের দিকে হাটা দেয়।
Hola! I’ve been reading your website for a while now aand finally got
the bravery to go ahead and give you a shout out from Humble Tx!
Just wanted tto ssay keep up the excellent work! https://bandur-Art.blogspot.com/2024/08/the-ultimate-guide-to-no-mans-sky-mods.html