ভালোবাসি প্রিয় ২ পর্ব ৩
অপরাজিতা রহমান
-“খালাম্মা ও খালাম্মা ইট্টু নিচে আহেন।দেহে যান বৃত্ত ভাইজান রে ফোনের ভিতরে দেহা যাইতাছে।চলদি আহেন খালাম্মা।”
-“কি হয়েছে জামেলা? চিল্লাচিল্লি করছিস কেন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে বলবেন মিসেস ঝর্না আবরার।”
-“চিল্লাচিল্লি ওরছি কি আর স্বাদে?আপনে আমারে ফোন কিনে দিছিলেন আমার অবসর সময় কাটানোর লাইগা। তো আমি সেই ফোনে টিকটিকি না কি জানি কয় ঐডার মধ্যে মাইয়াগোর নাচোন দেখতিছাম হঠাৎ দেহি ফোনের মধ্যিখানে বৃত্ত ভাইজান রে দেহন যায়। এই দেহেন কোন ছেড়ি যেন বৃত্ত ভাইজানের গালের মধ্যে চড় লাগাই দিছে।”
-“কই দেখি তো?”
-“এই যে লন।”
-“আরে এইটা তো বৃত্তের ভার্সিটি। কিন্তু এই মেয়েটা কে?মেয়েটা মনে হয় ভার্সিটি তে নতুন এসেছে।তবে মেয়েটার সাহস আছে বলতে হয়।যেই ছেলের ভ”য়ে পুরো ভার্সিটি কেঁপে ওঠে আর এই মেয়ে কি না তাকেই থা”প্প”ড় দিল।কে এই মেয়ে?জানা টা খুবই প্রয়োজন আমার।জামেলা আমার রুম থেকে ফোন টা নিয়ে আই তো।”
আরও পর্ব গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
_”এই লন খালাম্মা।”
-“অতঃপর মিসেস ঝর্না কোথায় যেন ফোন দিয়ে বললেন, আমি তোমাকে একটা ছবি পাঠাচ্ছি ,যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঐ মেয়ের পুরো বায়ো আমার চাই ।এজ এনি কস্ট।”
“ঠিক আছে ম্যাডাম। আপনি যেমন টা বলবেন তেমন ই হবে।”
আচ্ছা রাখছি তাহলে বলেই কিছু একটা ভেবে মিসেস ঝর্না আবরার পৌশাচিক হাসি দিলেন।”
দোয়া প্রিন্সিপাল স্যারের রুমের দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু ভেতরে যাওয়ার সাহস হচ্ছে না।না জানি ভেতরে গেলে প্রিন্সিপাল স্যার হয়তো বলবে, তুমি জানো তুমি কার গায়ে হাত তুলেছো? তোমার সাহস হয় কি করে এই ভার্সিটির মালিকের ছেলের গায়ে হাত তোলার? তোমাকে এই ভার্সিটি থেকে বহিষ্কার করা হলো।এই মুহূর্তে ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে যাও।
এমন আকাশ কুসুম চিন্তা করে দোয়া ইউনুস পড়তে পড়তে দোয়া প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে প্রবেশ করলো।কারন মানুষের জন্য দোয়া ইউনুস-এর ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক বেশি। আল্লাহর পয়গাম্বর হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম দেশ ত্যাগ করে চলে যাওয়ার সময় নদীতে ঝাঁপ দিলে তিনি মাছের পেটে বন্দি হন। এ অবস্থায় বিপদে পড়ে তিনি মহান আল্লাহর কাছে যে দোয়া পড়েন আর সে দোয়ার বরকতে আল্লাহ তাকে মহাবিপদ থেকে উদ্ধার করেছিলেন, তাই দোয়া ইউনুছ। আর তাহলো-
لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লা আংতা, সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বালিমিন।’
অর্থ : ‘তুমি ব্যতীত সত্য কোনো উপাস্য নেই; তুমি পুতঃপবিত্র, নিশ্চয় আমি জালিমদের দলভুক্ত।
অতপর আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিলাম। আমি এমনি ভাবে বিশ্ববাসীদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৮৭)
– তাফসিরে তাবারিতে আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে-
আর ইউনুস আলাইহিস সালাম মাছের পেটে বন্দি থাকা অবস্থায় আমাকে ডাকার ফলে যেভাবে তাকে মুক্তি দিয়েছিলাম সেভাবে আমি মুমিনদেরকেও বিপদ থেকে উদ্ধার করব যখন তারা আমার কাছে সাহায্য চায় এবং আমাকে ডাকে। অবশেষে দোয়া প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে প্রবেশ করে সালাম দিলো, আসসালামু আলাইকুম স্যার। ভেতরে আসতে পারি?
-“শিওর!কাম ইন।”
-“আমাকে ডেকেছেন স্যার?”
-“হ্যাঁ!সিট ডাউন।”
-“স্যার আমাকে কি এই ভার্সিটি থেকে বের করে দিবেন?”
-“তুমি যা করেছো এরপরেও এই ভার্সিটি তে পড়াশোনা করার আশা করছো কিভাবে?”
-“আমি তো অন্যায় কিছু করিনি স্যার।”
-কোনটা ন্যায় কোনটা অন্যায় তোমার থেকে শিখতে হবে আমার?”
-“দুঃখিত স্যার!তবে আমার দিক থেকে আমি কোন অন্যায় করি নি। তবু ও আপনি যে শাস্তি দিবেন আমি মাথা পেতে গ্রহন করবো।”
-“হা হা হা হা। তুমি কোন অন্যায় করো নি মা। বরং উচিত জবাব দিয়েছো। তোমার মতো এরকম সব মেয়ে হলে বৃত্তের মতো বখাটের সৃষ্টি হতো না। এমনকি তোমার এই উচিত জবাবে মিস্টার সামিউল আবরার ও মিসেস ঝর্না আবরার ও খুশি হয়েছেন। তোমার প্রতি তাদের কোন অভিযোগ নেই।”
-“তাহলে এই ভার্সিটি ছেড়ে যাচ্ছি না আমি?”
-“প্রশ্নই আসে না? তোমার মতো মেধাবী, সাহসী স্টং পার্সোনালিটির মেয়ে আমাদের ডিপার্টমেন্টের জন্য প্রয়োজন। তুমি বোরকা পরিধান করে আসতে পারে। ডিপার্টমেন্ট থেকে তোমাকে কোন প্রকার বাধা দিবে না। ইনফ্যাক্ট আমাদের ভার্সিটি তে এমন কোন রুলস নেই যে কেউ বোরকা পরিধান করে আসতে পারবে না।বৃত্ত এই রুলস বানিয়েছে।আর এই পর্যন্ত এই ব্যাপারে আমাদের ডিপার্টমেন্টে কোন অভিযোগ আসে নি।মেয়েরা স্বেচ্ছায় এমন খোলামেলা পোশাক পরিধান করে আসে।তবে আশা করা যায় তোমার দেখাদেখি হয়তো অনেকের মধ্যেই পরিবর্তন আসতে পারে। কেননা” সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস অসৎ সঙ্গে স”র্ব”না”শ । তোমার সংস্পর্শে এসে হয়তো কেউ পরিবর্তন হতে ও পারে।
-“আমি আমার সর্বত্র দিয়ে চেষ্টা করবো স্যার সবাই কে দ্বীনের পথে আনতে।”
-“তুমি এখন আসতে পারো। তোমার জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল।”
-” ঠিক আসে আসছি আমি। আসসালামুয়ালাইকুম”।
-“ওয়ালাইকুমুসসালাম।মন দিয়ে ক্লাস করবে।”
-“ঠিক আছে স্যার।”
ক্লাস রুমে প্রবেশ করার পাঁচ মিনিট পরে স্যারের আগমন ঘটলো।আজ যেহেতু ভার্সিটির প্রথম দিন তাই আজ কোন ক্লাস হলো না। প্রথম ক্লাসে শুধু পরিচিতি পর্ব হলো।বাকি দুই টা ক্লাসে বুকলিষ্ট দিলো আর বই সম্পর্কে একটু ধারনা দিলো। মোটামুটি প্রথম দিনেই সিমরানের সাথে একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ক্লাস শেষ করে ক্লাস রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই ইংলিশ আপার সাথে দেখা হয়ে গেল।হয়তো আবার কোন ইংলিশ শোনানোর জন্য অপেক্ষা করছেন।আমাকে বের হতে দেখে ইংলিশ আপা বলে উঠলো,হেই শর্ট গার্ল তোমাকে প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে যেতে দেখলাম। নিশ্চয় ভার্সিটি থেকে বিদায় হয়ে যাওয়ার নোটিশ দিয়েছে?বেশ করেছে? তোমার মতো মেয়ের যোগ্যতা নেই এই ভার্সিটি তে পড়াশোনা করার।
অবশ্য তোমার সাথে আমার যে শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছে তুমি যদি এই ভার্সিটি তে নাও থাকো তবুও তোমার আমার শত্রুতা শেষ হবে না। তুমি সবার সামনে আমাকে অপমান করেছো।এমনকি তোমার জন্য আমার জান বৃত্ত আমাকে অপমান করেছে।এতো সহজে আমি তোমাকে ছেড়ে দিব না। এখন ভালোই ভালোই এইখান থেকে বিদায় হও।
-“প্রথমতো এই ভার্সিটি ছেড়ে আমি কোথাও যাচ্ছি না। আমি এইখানেই পড়বো ইনশাআল্লাহ।আর দ্বিতীয়ত আপনি আমাকে শত্রু মনে করলেও আমি আপনাকে শত্রু মনে করি না।”আমি আপনাকে আমার বড় বোন মনে করি।”
-“বোন ইজ মাই ফুট।যাও তো আমার চোখের সামনে থেকে।”
ইংলিশ আপার থেকে বিদায় নিয়ে বুকলিষ্ট অনুযায়ী বই কিনে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে গোসল সেরে যোহরের নামাজ আদায় করে একটু ঘুমিয়ে নিলাম। কতোক্ষণ ঘুমিয়েছি জানি না।ঘুম ভেঙ্গে গেল ফোনের রিংটোনে।ফোন অনবরত বেজেই চলেছে।ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি তিন টা বাজে ।তার মানে এক ঘন্টা ঘুমিয়েছি। বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হতে যাবো এরই মধ্যে দেখি আবার ও সেই অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসছে। দশ বার কল দেওয়ার পরেও যখন কল রিসিভ করে নি , তখন টুং করে একটা
মেসেজ আসলো। মেসেজে লেখা ছিল,
ভালোবাসি প্রিয় ২ পর্ব ২
-“মিস দেড় ফুট তুমি হয়তো ভাবছো তোমার নাম্বার আমি কিভাবে পেলাম? যেইখানে তোমার আত্মীয় স্বজনের কাছেই তোমার নাম্বার নেই, সেইখানে আমার কাছে কিভাবে আসলো?তবে জেনে রাখো এই বৃত্তের কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই। তুমি বাঘের খাঁচায় হাত দিয়েছো। বিশ্বাস করো তোমার লাইফ আমি হেল করে দিব মিস দেড় ফুট।জাষ্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।কাল সকালের জন্য প্রস্তুত থেকো।কাল তোমার সাথে যা হবে তুমি ভাবতেও পারবে না মিস দেড় ফুট।”
I like this web site very much, Its a really nice place to read and
get information.Blog range