অবেলায় এলে তুমি পর্ব ২৮
তামান্না ইসলাম কথা
নতুন এক সকাল। নতুন সব আশা নিয়ে আলোয় আলোকিত করে তুলেছে চারপাশ। নতুন আশা, নতুন স্বপ্ন, নতুন পথচলা এক নতুন অধ্যায় দিয়ে ঘিরে উঠা এক সকাল। সমুদ্রের পানির শব্দ ভেসে আসছে। সেই সাথে ঠান্ডা হিমশীতল বাতাস।
তীব্র মাথা ব্যথা করছে অরিত্রির। মাথা ব্যাথায় মনে হচ্ছে, মাথা ছিঁড়ে পড়ে যাবে। মাথা ব্যাথার পাশাপাশি শরীরের জায়গায় ব্যাথা অনুভব হতে লাগে। মাথা এবং শরীর ব্যাথা নিয়ে উঠে বসতেই মাথায় যেনো বাজ পড়লো। নিজের নগ্ন দেহের দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠে। গতরাতের কথা সম্পূর্ণ স্মরণ করার চেষ্টা করে বৃথা হলেও আবছা আবছা মনে হতেই নিজের উপর রাগ করতে লাগলো। কিন্তু রাগ নিজের উপর প্রয়োগ না করে পাশে মাতাল হয়ে শুয়ে থাকা আয়ানের উপর প্রয়োগ করার চেষ্টা করলো।
“ইউ ইডিয়ট! তুমি আমার সাথে এইটা কি করলে নিজের কামকতা ধরে রাখতে পারো না? মদ খেয়ে আমার এতো বড় ক্ষতি করে দিলে?”
আরও গল্প পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন
নগ্ন শরীরের ব্ল্যাংকলেট ভালো করে জড়িয়ে পা দিয়ে ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে ফেলে দিয়ে তেজি গলায় কথা গুলো বললো অরিত্রি। মাতাল হয়ে থাকায় আয়ান সঠিক ভাবে বুঝতে পারলো না অরিত্রি তাকে কি বলেছে। দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে ফ্লোরে পড়ে থাকা অবস্থা থেকে উঠে বসলো।
” তুমি এখানে? তুমি এখানে কি করে এলে? গতরাতে তো এখানে তরী,,,,”
মাথা ব্যাথা নিয়েও নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছিল আয়ান। কিন্তু তরীর জায়গায় অরিত্রিকে দেখে এবার যেনো মাথায় তরতর করে রাগ উঠে গেলো। কোনো ভাবে এখন অরিত্রিকে ঘেঁটে দিতে চাই না। নিজের কাজ আগে ঠিক ভাবে করতে হবে নয়তো সব কিছু ভেস্তে যেতে দুই মিনিট সময় লাগবে না। আয়ান নিজের চুল টেনে ধরে নিজের রাগ কমাতে চাইলো। কোনো রকম অরিত্রিকে বুঝিয়ে ওয়াশ রুমে পাঠিয়ে দিলো।
” গবেট একটা! ফোনে রিং হয় শুনতে পারিস না? মেয়েদের সাথে ফুর্তি করার কথা বললে ঠিক শুনতে পাস। শালা তোদের আন্ডা কোষের মধ্যে দিয়ে মারা উচিত। এখন একটা কথা বলছি মন দিয়ে শোন আজকের রাতের মধ্যে সব কিছু শেষ করবে। আমি আর সময় নিতে চাইছি না। তুমি নিজের কাজ শেষ করে আমাকে টেক্সট করবে। আমি এই দিকটা সামলে নিবো।
একটা দেহেও যেনো প্রাণ না থাকে। যদি বেঁচে থাকে তাহলে সবার আগে তুমি মরবে।”
আরো কিছু কথা বলে ফোন কেটে দিলো আয়ান।সোহেলকে কথা গুলো বলে নিজের রাগ তাও যেনো কোনো ভাবেই কমাতে পারছে না সে। রুম জুড়ে পায়চারি করে কিছু ভাবতে থাকলো। অপরদিকে সোহেল এখনো কানের পাশে ফোন রেখে বসে আছে। একটু আগে বলা আয়ানের কথা যেনো ঠিক মতো হজম করতে পারছে না সে।
“শালা! নিজে তো প্রতিদিন নতুন নতুন মেয়ে খদ্দেরের কাছে যাবে আবার আমাকে বলতে আসে। আমার গায়ে হাত তুলেছিলি না! এবার দেখ আমি কি খেল দেখায়। শুধু অপেক্ষা কর।”
সোহেল নিজে নিজে কথা গুলো বলে আবারও কাউকে একটা ছোট মেসেজ করে রুম থেকে বেরিয়ে পড়লো।
নিজের উন্মুক্ত বুকপিঞ্জরে ঘুমিয়ে থাকা নিজের প্রিয়সীকে দেখে চলেছে নিহান। প্রিয়সীর নরম তুলতুলে হাত দুটো দিয়ে আবদ্ধ করে রেখেছে তার শরীর। বুকের উপর কেমন বাচ্চাছানার মতো করে শুয়ে আছে। বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে গালে স্লাইড করছে তো একবার ঘন কালো কেশের ভিতরে হাত ডুবিয়ে দিচ্ছে।
ঘুম হালকা হয়ে আসতেই আধো আধো চোখে চোখ মেলে তাকাতেই নিহানকে একদৃষ্টিতে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আবারও চোখ নামিয়ে নিলাম। ভদ্রলোকের দৃষ্টি আমাতেই আটকে আছে। যা আমাকে বরাবরের মতো এবারও এক রাশ লজ্জায় ঘিরে রেখেছে।
” এতো ভালোবাসার পরেও এখনো দেখছি বউ আমার লজ্জার সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। একি আমার ব্যর্থতা? কিন্তু যদি কেউ চাই তাহলে আমি কিন্তু লজ্জা ভেঙ্গে দিতে পারি।”
ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তুলে কথা গুলো বললো নিহান। নিহানের কথা শুনে চোখ পাকিয়ে তাঁর দিকে তাকাতেই ভদ্রলোক কপালে অধর ছুঁয়ে দিলো।
“ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও আমরা বের হবো। আগে ব্রেকফাস্ট করবো তারপর ঘুরা ফেরা হবে।”
আবারো গালে চুমু দিয়ে কথা গুলো বলে নিহান নিজের হাতের বাঁধন আলগা করে দিতে আমিও টুপ করে নিহানের ঠোঁটে চুমু দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
কক্সবাজারের সব থেকে সুন্দর তম বিচ লাবণী বিচ। কক্সবাজার শহর থেকে নৈকট্যের কারণে লাবণী বিচকে কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়। শহর থেকে নৈকট্যের কারণে লাবণী বিচকে কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়। নানারকম জিনিসের পসরা সাজিয়ে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট বড় অনেক দোকান যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এছাড়া এখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেট।
বিস্তীর্ণ বেলাভূমি, সারি সারি ঝাউবন, সৈকতে আছড়ে পড়া বিশাল ঢেউ।
সকালবেলা দিগন্তে জলরাশি ভেদকরে রক্তবর্ণের থালার মতাে সূর্য। অস্তের সময় দিগন্তের চারিদিকে আরাে বেশি স্বপ্নিল রঙ মেখে সে বিদায় জানায়। এসব সৌন্দর্যের পসরা নিয়েই বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে রচনা করেছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। প্রায় ১২০ কিলােমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী বলা হয় এ জায়গাটিকে। সড়কপথে ঢাকা থেকে প্রায় ৪৫০ কিলােমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১৫০ কিলােমিটার দূরে রয়েছে নয়নাভিরাম এ সমুদ্র সৈকত। এখানকার সমুদ্রের পানিতে গােসল, সূর্যাস্তের মনােহরা দৃশ্য দেখেও ভালাে লাগবে। কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণের শুরুটা হতে পারে লাবনী পয়েন্ট থেকে।
লাবনী বিচ ধরে হেঁটে হেঁটে পূর্ব দিকে সােজা চলে যাওয়া যায় যায় হিমছড়ির দিকে। যতোই সামনে এগুবেন ততােইসুন্দর এ সৈকত। সকাল বেলা বের হলে এ সৌন্দর্যের সাথে বাড়তি পাওনা হবে নানান বয়সী জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। শুধু সমুদ্র সৈকতই নয়, কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির, বার্মিজ মার্কেট, হিলটপ রেস্টহাউস ইত্যাদি কক্সবাজার ভ্রমণের অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান। কক্সবাজার শহরের জদি পাহাড়ের উপরে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির। শহরের যে কোন জায়গা থেকেই রিকশায় আসা যায় এখানে। সান বাঁধানাে সিঁড়ি ভেঙ্গে জাদির পাহাড়ের উপরে উঠলে সাদা রঙের এসব বৌদ্ধ প্যাগােডা দেখে ভালাে লাগবে। এই পাহাড়ের উপর থেকে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থান দেখতে পাওয়া যায়। শহরের আরেক জায়গায় রয়েছে অর্ঘমেধা কেয়াং নামে আরেকটি বৌদ্ধ প্যাগোডা। কাঠের তৈরি প্রাচীন এ বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে।
নিজ রুমের মেঝেতে রক্তাক্ত পড়ে আছে নিহানের মা রৌশানা বেগম। সম্পূর্ণ রুম জুড়ে রক্তে ভেসে আছে। রৌশানা বেগমের থেকে একটু দূরে মুখ থেঁতলে অবস্থায় পড়ে আছে নিরাত্রির রক্তাক্ত দেহ। ছোট একটা নিষ্পাপ দেহ কি ভাবে পড়ে আছে। খু*নির মনে হয় এতটুকু শিশুকে এভাবে মেরে ফেলতে হাত কাঁপেনি। কি বিচ্ছিরি ভাবে দুটি প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। রৌশানা বেগম এবং নিরাত্রির থেঁতলে যাওয়া দুটি দেহকে একবার ভালো মতো দেখে নিজের পকেট থেকে ফোন বের করে আয়ানকে ফোন করে সোহেল। দুইবার রিং হতেই ফোন তুলে নেয় সে।
” এই দিকের কাজ সম্পূর্ণ শেষ স্যার। ডঃ সেন, নিহানে মা এবং নিরাত্রি এদের চ্যাপ্টার শেষ। এই দিকের কাজ সম্পূর্ণ শেষ করে ফেলেছি। আমার কাজ শেষ স্যার।”
সোহেলের কথা শুনে ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটে ওঠে আয়ানের। নিহানের দুর্বল পয়েন্ট গুলো এভাবে শেষ করতে পেরে এক আলাদা অনুভূতি হচ্ছে। সোহেলের ফোন কেটে দিয়ে কিছু একটা ভেবে অরিত্রির কাছে চলে যায় আয়ান। এখন অরিত্রির চ্যাপ্টার শেষ করতে হবে।
অন্ধকারে রুমে হাত বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে নিহান। টিমটিম করে জ্বলে ওঠে আবারো নিভে যাচ্ছে একটি ৬০ ভল্টের বাতি। মাথায় আঘাত পাওয়ায় মাথা যন্ত্রণা করছে খুব। ধুর থেকে পানির শব্দ ভেসে আসছে কিন্তু তা-ও অস্পষ্ট। গরমে ঘাম বেয়ে বেয়ে পরিহিত সাদা রঙের শার্ট গায়ে লেপ্টে আছে। কিন্তু সাদা রঙের শার্ট আর সাদা রঙে সীমাবদ্ধ নেই। বালি এবং মাটির আবরনে সৃষ্টি হয়েছে এক আলাদা রঙ।
অন্যদিকে তৃষ্ণায় চৌচির হয়ে যাচ্ছে গলা। মিয়ে যাওয়া গলায় কয়েক বার পানি চাইলো কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেলো না। অন্যদিকে এখন সময় কয়টা সে-ই বিষয়ে ঠাউরে করতে পারছে না। কয় ঘন্টা ধরে এখানে এভাবে পড়ে আছে তার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। নিস্তব্ধ, অন্ধকার ঘরের মাঝে হঠাৎ করে দরজা খোলার শব্দ ভেসে আসে। সে-ই সাথে কারো পায়ের শব্দ শুনে বুঝতে পারে ঘরের ভিতরে কেউ আসছে। আবারো মিনমিন কন্ঠে পানি চেয়ে মাথা নুইয়ে পড়ে গেলো।
চোখে মুখে পানির ঝাপটা পড়তেই দু’চোখ মেলে সামনে তাকাতেই চোখ কপালে উঠে গেলো। নিহান হাত পা বাঁধা অবস্থায় একটা চেয়ারে বসে আছে। আর তার সামনে সে-ই মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে যার সাথে আমার ধাক্কা লেগেছিল। ভালো করে চোখ মেলে তাকাতেই এবার অবাকের শেষ স্তরে পৌঁছে গেলাম। মেয়েটার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে আয়ান। তার ঠোঁটে হাসি।
“আয়,,,!”
“অরিত্রি তুমি বেঁচে আছো?”
আমার কথা বলার আগেই নিহান কথা গুলো বলে উঠলো। নিহানের কথা শুনে অবাক নয়নে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রমনীকে দেখতে লাগলাম। অত্যাধিক সুন্দর এবং টানা টানা দুই চোখ। উচ্চতা বেশ। চুল গুলোও সুন্দর। মায়াবী চেহারার মাঝে ঠোঁটের বাম ছোট একটা তিল যেনো আরো আকর্ষন করে। এই নারী যে কোনো পুরুষের হৃদয়হরণ করতে সক্ষম এই মেয়ে। গায়ে কালো শার্ট যেনো সুন্দর শরীরের ফুটে উঠেছে। আমি নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে আছি মেয়েটার দিকে।
হঠাৎ করেই মনে এক অজানা ভয় কাজ করতে শুরু করলো। নিহান তো অরিত্রকে ভালোবাসে এবং নিজের সন্তানের মা সে। অরিত্রি বেঁচে আছে তাহলে কি নিহান আমাকে ছেড়ে দিবে? আমার ঠাঁই আবার সে-ই মামার বাড়ি হবে? আচ্ছা আমি নিহান, নিরাত্রি এদের ছাড়া থাকবো কি ভাবে? নিরাত্রি কি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে?
” হ্যাঁ! বেঁচে আছি। এই দেখো তোমার সামনে জলজ্যান্ত ভাবে দাঁড়িয়ে আছি।”
হাসতে হাসতে কথা গুলো বলতে বলতে আমার সামনে এসে দাঁড়ায় অরিত্রি।
“তুমি খুব বোকা তরী। মাথায় বুদ্ধি নেই বললেই চলে। নিহান কি একটু মিষ্টি কথা বললো আর তুমি নিজের কাজ থেকে পিছিয়ে গেলো। একটা বার সত্যিটা জানতে চাইলে না। এতে অবশ্য তোমার দোষ নেই! নিহান ছেলেটা এমন। কি ভাবে নিজের পথ থেকে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায়, কিভাবে নিজের দিক থেকে নজর সরাতে হয় এইসব খুব ভালো করেই নিহানের জানা আছে। ”
কথা গুলো বলতে বলতে এবার নিহানের সম্মুখে গিয়ে দাঁড়ায় অরিত্রি। আমি শুধু মেয়েটাকে দেখেই যাচ্ছ যাচ্ছি। এই মেয়েই আমাদের রুমে এসে চিরকুট রেখে গিয়েছিল আর আমার মাথায় আঘাত করে।
“তুমি এসেছিলে তাই না আমাদের রুমে! চিরকুট এবং আমাকে আঘাত করো আর সে-ই দিন তুমিই ছিলে যার সাথে আমার ধাক্কা লেগেছিল।”
“তুমি এতো দিন কোথায় ছিলে অরিত্রি? আর এতো নাটক করার কি প্রয়োজন ছিলো তোমার? একটা বার নিজের মেয়ের কথা মনে হয়নি তোমার? কখনো এইটা ভাবোনি তোমার অবর্তমানে মেয়েটার কি হবে?”
” প্রয়োজন ছিলো নিহান! প্রয়োজন ছিলো। তোমাকে শেষ করার জন্য প্রয়োজন ছিলো। তোমার জন্য আমার আদরের বোন মা*রা গেছে। আমার বাবা মা*রা গেছে। আমার বোনের কি দোষ করেছিল? তোমার কুকর্ম গুলো দেখে নিয়েছিল তাই তুমি আমার বোনকে মেরে দিলে? আমার নির্দোষ বাবাকে মিথ্যে পুলিশ কেস দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছো তুমি। মেয়ে এবং স্বামীর এমন দুর্দশা দেখে আমার মা আমাকে একা রেখে পাড়ি জমালো না ফেরার দেশে। শুধু মাত্র তোমার জন্য নিজের পরিচয় থাকতেও আমাকে নামহীন পরিচয় দিতে হয়েছে। এতো অন্যায় করার পরেও আমি তোমাকে ছেড়ে দিবো ভেবেছ? আমাকে যেই মানুষ শেষ করে দিয়েছে তাকে ছেড়ে দিবো? এইসব নাটক তো আমি তোমার জন্য করেছি।”
অরিত্রি কথা গুলো বলতে বলতে আমার হাতে ইনজেকশন পুশ করলো। ইনজেকশন পুশ করার কিছু মূহুর্ত পর চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করলাম। ধীরে ধীরে চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসতে লাগলো।
“তুমি কিসের ইনজেকশন দিলে তরীকে?”
অবেলায় এলে তুমি পর্ব ২৭
” ভয় পেও না নিহান। তরীর কিছু হবে না। শুধু এখানে যা হয়েছে তা ভুলে যাবে। কিন্তু আমার ইচ্ছে করছে আমার মতো তোমাকেও একলা করে দিতে। তখন বুঝতে পারবে কাছের মানুষদের হারানোর কষ্ট কতটা।”
” তুমি আমার উপর যেই ব্লেইম দিচ্ছ তার আগে তোমার বোন আর বাবার সম্পর্কে কিছু তথ্য দেয়। তোমার ভালো বোন এবং বাবা কতটা নির্দোষ সেটাও তোমার জানা উচিত।”
“চুপ! তোর মুখ থেকে আমার বাবা আর বোনকে নিয়ে কিছু শুনতে চাই না। তোর মতো খুনি, মিথ্যেবাদী আমার বাবা বোনকে কিছু বলবে তা আমি কিছুতেই শুনবো না।”
“অরিত্রি!”